মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ। ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি

  আপনি কি ব্রয়লার মুরগী পালন করতে চাচ্ছেন,তাহলেব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি ও ব্রয়লার মুরগির ৩০ দিনের ঔষুধ তালিকা অথবা মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ, মুরগী পালন করেন কিন্তু ঔষধ এবং পালন সম্পর্কে কিছু জানার ইচ্ছে আচে তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য। তাই উক্ত পোষ্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন, আশা করি উক্ত পোষ্ট দিয়ে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

ব্রয়লার-মুরগী-পালন-পদ্ধতি-ব্রয়লার-মুরগির-৩০-দিনের-ঔষুধ-তালিকা
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আসুন উক্ত পোষ্ট দ্বারা আমরা ব্রয়লার মুরগীর উপকার ও ক্ষতি। সম্পর্কে জানাব তাই আর দেরি না করে আসুন পড়ুন, আর আপনার উত্তর খুজুন।

ভূমিকা

ব্রয়লার মুরগী আমাদের দেশে অনেক কমন একটি খাদ্য। অনেক লোক আচে যাদের টাকার অভাবে মাংস খাওয়ার সৌভাগ্য থাকেনা। তাদের জন্য খুব ভালো একটি খাদ্য হলো ব্রয়লার মুরগী। আমি আপনাদের উক্ত পোষ্ট দ্বারা জানাব ব্রয়লার মুরগী দারা কি কি উপকার ও ক্ষতি হয়েছে। 

কিভাবে মুরগী পারন করতে হয়। মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ মুরগী পালনের সঠিক নিয়ম। ব্রয়লার মুরগীর ৩০ দিনের ঔষধের তালিকা। মুরগির ওজন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়। তাই এসব জানতে পুরা পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জানুন।

ব্রয়লার মুরগির উৎপত্তি

যে সকল মুরগী দ্রুত-বৃদ্ধি হয় সেগুলা মুরগীকেই বলা হয় বয়লার মুরগী। তবে এগুলোর ভিতরে অনেক জাত রয়েছে। বিশেষ জাতের বাচ্চা হলে ২৮ থেকে ৩০ দিনের ভিতরে ২ থেকে ২.৫ কেজি পর্যন্ত এদের ওজন হয়ে থাকে। প্রতিটি মুরগীকে যদি ৩ কেজি খাদ্য খাওয়ানো হয় তাহলে ২৮ থেকে ৩০ দিনের ভিতরে এদের ওজন ২.৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এদের দেহে প্রচুর পরিমানের মাংস হয়ে থাকে, এবং এদের দেহের সামনের অংকের মাংস নরম ও থলথলে হয়ে থাকে। বয়লার মুরগী আমাদের দেশে ১৯৭৬ সন থেকে ১৯৭৮ সনের মধ্য সময় থেকে পালন শুরু হয়েছিলো। এবং আকোন তা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুরগী পালনের  উপকারিতা

ব্রয়লার মুরগী পালনের ফলে দেশের অনেক বেকার ছেলে স্বাবলম্বী হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগী থাকার ফলে দেশে মাংসের চাহিদা অনেকটা পূরণ হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগী থাকার ফলে অনেক গরিব অসহায় মানুষের মাংস খাওয়ার ইচ্ছে পুরন করে থাকে। তাছাড়া মুরগির ডিম দেশে ব্যাপক গারে সফলতা এনেছে। মাংস ও ডিম ছোট ছোট পরিবারের খাবারের চাহিদা পুরন করে। ব্রয়লার মুরগির ৩০ দিনের ঔষুধ তালিকা অনেক গুরুত্বপূর্ন। 

ব্রয়লার মুরগী পালনের ক্ষেত্রে অল্প খরচে একজন সফল ব্যাবসায়ি হওয়া যায়। এবং অনেকে আচে যাদের টাকার অভাবে মাংস খাওয়ার সৌভাগ্য থাকেনা তারা অল্প খরচে ব্রয়লার মুরগির মাংস খেতে পারে। এছাড়াও ব্রয়লার মুরগীর দ্বারা দেশের সকল মানুষের মুখে হাঁসি ফুটে তুলেছে।

ব্রয়লার মুরগির খামার ব্যবস্থাপনা

মুরগির খামারে সব সময় পর্যাপ্ত পরিমানের আলো-বাতাস থাকা জরুরি। সর্বদা আলো-বাতাস যাওয়া আশার পথ থাকতে হবে। এতে খামারে গ্যাস বৃদ্ধি পাবে মুরগী তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে। ব্রয়লার মুরগী এমন জায়গায় করা উচিত যেখানে যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভালো থাকে। এবং জনবসতি থেকে কিছুটা দুরে থাকা ভালো। প্রয়জন মতো ঔষধ, খাদ্য, পানি, এবং তাপের ব্যবস্থা থাকা উচিত। 

শীতের দিনে অধিক পরিমানে বাল্ব দ্বারা তাপ দিতে হবে। এবং গরোমের সময় ফ্যান প্রয়োজনীয় ভ্যান্টিলেশন ও ফ্যানের ব্যাবস্থা থাকতে হবে। এবং খামারটি কিছুটা উঁচু জায়গায় নির্মাণ করা দরকার, এতে আলো-বাতাস যাতায়াতে বিভিন্ন সুবিধা হয়ে থাকে। বন্যা ও বৃষ্টির পানি যেনও প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খামারটি ভালো ভাবে নির্মাণ করতে হবে যাতে ঝর-বাতাস প্রতিরোধ করতে পারে।

ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি

ব্রয়লার এক প্রকার বিশেষ জাতের মুরগী। ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি  ব্রয়লার মুরগী সম্পর্কে বিশেষ কিছু তত্ত্ব আচে যা মাত্র ৪ টি দেশেই প্রচলিত রয়েছে। মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ এবং এই ৪ টি দেশে ব্রয়লার মুরগির সমস্ত জাত রয়েছে।

ব্রয়লার মুরগী দিনে ৩৫ থেকে ৪২ গ্রাম পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি হয়ে থাকে। এবং বাচ্চার দেহের ওজন ভালো হলে একদিনের ভিতরেই বেচা সম্ভব। সুষুম খাদ্য খুব উচ্চ মানের হওয়া চাই। অনেক সময় দেখা যায় ব্রয়লার মুরগীর ভিতরে কিছু দল আগে বাড়ে কিছু দল একটু ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায়। এবং এদের দেহে খুব ভালো পরিমানের মাংস তৈরি হয়।

আরো পড়ুনঃ দেশি গরু চেনার উপায় - দেশি গরুর খাদ্য তালিকা

বাচ্চা হবার পর থেকে ৭ দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে ২২.২৪% আমিষ জাতিয় খাদ্য খাওয়াতে হবে।এবং এদের দেহে ২৮০০ থেকে ৩১০০ কিলোক্যালরি তাপ দিতে হবে। এদের সুষম খাদ্য ১৮.৯২% পর্যন্ত থাকবে। ২৮ থেকে ৩০ দিন বয়সে এদের মাংস খাওয়ার উপযুক্তি হয়।

মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ

ব্রয়লার মুরগির ৩০ দিনের ঔষুধ তালিকা, মুরগির ঝিমানো রোগের ঔষধ, এই সকল মুরগী ১ থেকে ৩০ দিনে বিক্রয়ের জন্যে উপযোগী হয়ে যায়। মুরগী পালন করার আগে অবশ্যই ঔষুধ তালিকা সম্পর্কে যানা জরুরি।

ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিনঃ প্রতিটি মুরগীর উপর সর্বোচ্চ ৪ বার ভ্যাকসিন করা হয়। অনেকে এগুলো পানিতে গুলে কাওয়ায়।আবার কেউ কেউ সেগুলা চোখের ভিতরে ড্রপার দিয়ে দেয়। ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়ার সঠিক নিয়ম হলো তাদের চোখে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিৎ। চোখে ভ্যাকসিন দিলে ১০০% কাজ করে। এবং তার ফলে যে কোন প্রকারের রোগ-প্রতিরোগ হতে মুক্ত থাকে।

ব্রয়লার মুরগির প্রথম তিন দিনের ঔষধ প্রণালীঃ ব্রয়লার মুরগী পালনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঔষধ। যদি সঠিক নিয়মে ঔষধ খাওয়াতে পারলে এরা সুস্থ থাকে এবং খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়। বাচ্চা হওয়ার পরে থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত সাদা পানি ব্যাবহার করতে হবে। ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি।

তার পরে ৭২ ঘন্টা এন্টিবায়োটিক জাতিয় ঔষধ ব্যাবহার করতে হবে। বাচ্চা কেনার সঙ্গে সঙ্গে কোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যাবহার করা যাবে না। এতে বাচ্চার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। বাচ্চা কেনার পরে কিছুটা পানি পান করিয়ে। তার পরে ঔষধ খাওয়াতে হবে।

৪থেকে ৭ দিনের ঔষুধ প্রণালীঃ চতুর্থ দিন B-1/B-2 বা থায়ামিন প্লাস ঔষধ ব্যাবহার করতে হবে। ৫ম দিন এ ডি থ্রি নামক ভ্যাকসিন দিতে হবে। ৬ ও ৭ নাম্বার দিনে ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ খাওয়াতে হবে।
৮ থেকে ১০ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ সকালে সাদা পানি, দুপুরে জিঙ্ক, রাতে টেট্রাভেট খাওয়াতে হবে। ১০ দিনে সাদা পানি,, দুপুরে এডিথ্রি, ও রাতে ভ্যাক্সিন সহ এডিথ্রি দিতে হবে।

১১ থেকে ১৫ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ ১১,১২,১৩,১৪ দিনে এমোডিস, রেনমক্স ও রেনামাইসিন ঔষধ ব্যাবহার করতে হবে। ১৫ তম দিনে সাদা পানি, দুপুরে তুঁতে ও রাতে সাদা পানি দিতে হবে।
১৬ ও ১৭ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ সকালে সাদা পানি, দুপুরে ভিটামিন, রাতে ক্যালসিয়াম। পরের দিন সকালে এডিথ্রি, দুপুরে ভ্যাকসিন(গাম্বুরা),রাতে সাদা পানি দিতে হবে।

১৮ থেকে ২১ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ সকালে লিভার টনিক, দুপুরে জিংক, রাতে সাদা পানি দিতে হবে। কারন এই সময় ব্রয়লার মুরগির রোগ সংক্রমণের একটি সময়। তাই এই সময়ে সঠিক ভাবে ঔষধ ব্যাবহার করতে হবে।

২২ থেকে ২৫ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ এই সময় টকসল ও ডিভেট ব্যাবহার করতে হবে। সকালে টকশাল, দুপুরে পানির সঙ্গে ডিবেটট, রাতে তুঁতে দিতে হবে।
২৬ থেকে ৩০ দিনের ঔষধ প্রণালীঃ সকালে পিএইচ, দুপুরে ভিটামিন-সি, ও রাতে এডিথ্রি দিতে হবে। অতিরিক্ত গরম হলে ভিটামিন-সি দিতে হবে। এবং লেবু পানি বা কুসুরে।ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি দিতে হবে। এগুলোর ফলে স্টোক থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির উপায়

মুরগির ওজন বৃদ্ধি করতে হলে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে, মুরগির বাচ্চার জাত ও বাচ্চা ভালো হতে হবে। এসবের পরে দেখায়ল রাখতে হবে ভালো খাবার। ব্রয়লার মুরগী পালন পদ্ধতি ও সঠিক ভালো পরিচর্যা করা। সব সময় খেয়াল রাখতে হবে মুরগী যদি খাবার কম খায় সেক্ষেত্রে ভিটামিন ও হজমি ঔষধ খাওয়াতে হবে। ভিনেগার, এনজাইম, পিএইচ, এবং এডিথ্রি সহ বিভিন্ন ঔষধ সময় মতো ভালো ভাবে খাওয়াতে হবে। ভালো মানের খাদ্য খাওয়ানো জরুরি যেমন নারিশ, লেয়ার ইত্যাদি।

প্রিয় পাঠক বন্ধুগন, আশা করি আপনি উক্ত পোস্টটি মনোযেগ সহকারে পড়েছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে পড়ে নিন। আমা মূলত বিভিন্ন বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। উক্ত পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে একটি কমেন্ট করে আপনি আপনার মতামত আমাদের জানাবেন। এবং একটি শেয়ার দিয়ে আপনার বন্ধুদের দেখার সুযোগ করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শামিম বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url