পিতা মাতার অবাধ্য সন্তানের শাস্তি - পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কি হয়

সন্তান পিতা মাতার অবাধ্য সন্তানের শাস্তি বা পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কি হয় এর শাস্তি খুব ভয়াবহ হতে পারে এবং পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া অনেক বড় অপরাধ। হাদিস শরীফে অসংখ্যবার এসেছে যে এর শাস্তি কি রকম হতে পারে।
পিতা-মাতার-অবাধ্য-সন্তানের-শাস্তি
এই পোস্ট পিতা মাতার অবাধ্য হলে সন্তানের শাস্তি কি রকম হতে পা তা সহিহ হাদীসের আলোকে তুলে ধরা হয়েছে। তাই সম্পূর্ন পোস্টটি অত্যান্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকাঃ

একজন পিতা মাতা হলো দুনিয়াতে সন্তানের জন্য জান্নাত বা জাহান্নাম। দুনিয়াতে যারা পিতা মাতাকে খুশি করতে পারবে তারা পরকালে সফলকামি হবে। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব কোরআন এবং হাদিসে পিতা মাতার কর্তব্য কি বলেছেন। এবং পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে ইসলামের দৃষ্টিতে তার কি রকম শাস্তি হতে পারে।

ইসলামে পিতা মাতার মর্যাদা

পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কি হয় কুরআন ও হাদিসে পিতা মাতাকে সম্মান দেওয়া হয়েছে। যারা দুনিয়াতে পিতা মাতাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না তাদের জন্য পরকালে কঠোর আজাব/শাস্তি ভোগ করতে হবে। যেই সন্তান তার পিতা মাতাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না আল্লাহ তায়ালা তাদের ইবাদত কবুল করেন না।

পিতা মাতার সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামিন নিদের্শ প্রদান করে বলেছেন, "আমার হুকুম পালন করো এবং পিতা মাতার হোক আদায় করো "[সূরা লোকমান, আয়াত নংঃ- ১৪]। 
অতএব, পিতা মাতার সম্মান ও মর্যাদা সবার উপরে। পিতা মাতার অবাধ্য সন্তানের শাস্তি যে অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে তারও উল্লেখ রয়েছে কোরআন ও হাদিসে।
হাদিসের আলোকেঃ- পিতা মাতার মর্যাদা সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "পিতা-মাতার সন্তুষ্টির ওপরই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়"। (এবং পিতা মাতার অসন্তুষ্টির ভিতর দিয়েয় আল্লাহ নারাজ হয়ে যায়)।

কোরআনে আলোকেঃ- মহান আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কুরআনে বলেন, "তোমার প্রতিপালক তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে; তাদের ভিতরে কোন একজনও যদি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে তোমাদের ইবাদত কবুল হবে না এবং তোমরা সারা জীবন যা ইবাদত করেছো যেগুলো সব আমল ধ্বংস হয়ে যাবে। কোনও আমলি আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।

পিতা মাতার অবাধ্য হলে সন্তানের শাস্তি কি রূপ হবে

পিতা মাতার উপর  অবাধ্য সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, একতা একদিন এক সাহাবি রাসুল (সাঃ) কে পিতা মাতার অবাধ্যতা সম্ভর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি বলেন, কবীরা গুনাহগুলো হচ্ছে, আল্লাহ তায়ালা'র সাথে কাউকে শরীক করা, ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা কসম খাওয়া, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং অবৈধ্যভাবে কাউকে হত্যা করা"(ইমাম বুখারী শরিফ, হাদিস নং- ৬৮৭০)। 

এবং উক্ত হাদিস দিয়ে পিতা মাতার অবাধ্য হওয়াকে কবিরা গোনাহ হিসাবে সম্মোধন করা হয়েছে। আর কবিরা গোনাহ এর শাস্তি হলো জাহান্নাম।
হযরত আবু বক্কর (রাঃ)হতে বর্নিত  তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা সকল শাস্তি কিয়ামতের ময়দানে দেবেন, কিন্তু পিতা-মাতার প্রতি অবাধ্যতার শাস্তি আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতেই দিবেন এবং কিয়ামতের ময়দানে তাদের মাথার উপরে সূর্য এবং পায়ের নিচে তামা দ্বারা আবদ্ধ করবেন"।

হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) হতে বর্নিত হয়েছে যে, তিন শ্রেনির ব্যাক্তি/ মানুষের প্রতি আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন অসন্তুুষ্টী হবেন। তারা হলোঃ- ১. পিতা মাতার প্রতি অবাধ্য ব্যাক্তি। ২. মদপানে অভ্যস্ত ব্যাক্তি। ৩. কারো উপকার করে খোঁটা দানকারী ব্যাক্তি।

রাসুল (সাঃ)বলেন যে, ঐ ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেনা যে ব্যাক্তি তার পিতা মাতার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে না।

পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কি হয়

জন্নগ্রহনের পর থেকে পিতা- মাতা আমাদের আদর-স্নেহ, মায়া-মমতা দিয়ে লালন-পালন করে বড় করে তোলে। সন্তান হিসাবে তাদের এই ত্যাগের মূল্য দেওয়া আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। এবং তাদের কষ্টের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা নারাজ হন।আমরা উপরে জেনেছি যে কুরআন এবং হাদিসের আলোকে পিতা-মাতার প্রতি অবাধ্য সন্তানের শাস্তি কেমন হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। 

সুতরাং পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কোনদিন জান্নাত পাওয়া যাবে না। তাদের কষ্ট দেওয়া ইসলামে জঘন্যতম পাপ/অপরাধ। অতএব, পূর্বে উল্লেখিত হাদিসগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে মাতা-পিতার যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করব। এবং ইসলামের উপর জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

পিতা মাতার প্রতি সম্মান 

পিতা মাতাকে কষ্ট দিলে কি হয় ইসলামি পিতা মাতাকে কিরূপ সম্মান দেওয়া হয়েছে তা নিম্ন আলোচনা করা হলোঃ- হাদিস শরিফে এসেছে যে পিতা মাতার প্রতি সম্মানের মধ্যমে আল্লাহ তায়ালা'কে রাজি খুশি করা যায়।

আর রাসুল (সাঃ)  বলেছেন যে,, যেই ব্যাক্তি/সন্তান তার মা-বাবাকে সম্মান করল রাজি খুশি করলো সে যেন নিজের জন্য জান্নাত কামায় করলো।
আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্নিত তিনি তার নিজের লেখা হাদিসে বর্ণনা করেন যে,কেউ যদি আল্লাহ কে রাজি খুশি করতে চাই সে যেন নবিকে (হযরত মুহাম্মদ সাঃ) রাজি খুশি করে। আর কেউ যদি নবিকে খুশি করতে চাই সে যেন তার পিতা-মাতাকে  রাজি খুশি করে নেই।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা,  আমরা নিশ্চয়ই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে পিতা-মাতার সম্মান, এবং পিতা মাতার উপর আমাদের কর্তব্য এবং পিতা-মাতাকে কষ্ট দিলে শাস্তি কি রূপ হবে তা জেনেছি। সুতরাং, আমরা পিতা মাতাকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকব এবং তাদের সম্মান দিব। আল্লাহ যেনও আমাদের সকলকে কবুল করে আমিন। উক্ত পোষ্ট ধৈর্য সহকারে মনযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।

উক্ত পোস্ট যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার আপনি আপনার মতামত যানান। আপনার একটি কমেন্ট আমাদের আরো পোস্ট লেখতে উৎসাহিত করবে। এবং একটি শেয়ার দিয়ে আপনার সকল বন্দুদের  দেখার সুযোগ করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শামিম বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url