সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য - সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায়

সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য ও সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় আমরা আমাদের যানা প্রয়োজন। এছাড়াও পুরাতন মধু বা কাঁচা মধুর অথবা পুরাতন মধু কেমন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে তা যানা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু এর ভিতরে পুরাতন মধু খাওয়ার ফলে হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তদের জন্য অনেক উপকারি।
সরিষা-ফুলের-মধুর-বৈশিষ্ট্য
মৌমাছিরা সকল ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ করে। এরপরে সেগুলোকে মৌচাকে একত্রিত করে মধু জমায়। জমানো মধু মাধ্যমে সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াকরণ বাজারজাত করা হয়। মধুতে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খাদ্য রয়েছে। যা যুগে যুগে মধুর নানা গুরুত্বপূর্ণ কারণে সোনালি তরল হিসেবে ব্যাবহিত করে।

ভূমিকা

মৌমাছিগণ তাদের নিজের এনজাইম ও তরলের বাষ্পীভবনের মাধ্যমে উদ্ভিদের মিষ্ঠান্ন বা চিনিজাত থেকে মধু তৈরি করে থঅকে। বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা মোম দিয়ে মৌচাক তৈরি করে সেখানে মুধ সঞ্চয় করে থাকে। মৌয়ালরা সেই মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করে থাকে। মিষ্টি স্বাদের খাবারটি রান্নাবান্নায় ব্যপকভাবে ব্যাবহিত করে। আবার অসামান্য পুষ্টিগুণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও এটি ব্যবহার করে। ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে হালকা লালচে রঙের মিষ্টি পশুর ফুলের মধু তৈরি করে। 

মধু শর্করায় ভরপুর তাই মধু খাওয়া উচিত। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এর বক্তব্য অনুযায়ি, নারী লোকের জন্য দিনে ৮০ থেকে ১০০ ক্যালোরি এর চেয়ে অনেক বেশি চিনি গ্রহণ করা উচিত নয়। পুরুষগণ দিনে ১৫০ থেকে ১৮০ ক্যালোরি পর্যন্ত খেতে পারে।

সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় এর ভিতরে ফুলের মধ্যে সরিষা ফুলের মধু অন্যতম। কারণ বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন হয়ে থাকে। এতে প্রায় সবখানেই সরিষারা এই চাষকেই কাজে লাগাতে হচ্ছে। তাই এই সরিষা ফুল থেকে প্রাপ্ত মধুর ঘ্রাণ পাওয়া যায় ও স্বাদ অসাধারণ সুন্দর ও মিষ্টি। বিশেষ করে সরিষা ফুলের কাঁচা মধু খুই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য কিছু বিশেষ উপাদান মিশ্রিত হয়ে থাকে। তাই সরিষা ফুলের মধু পেশীতে বাহ্যিকভাবে ব্যবহার আঘাতের ব্যাথা উপশম হয়।
সরিষা ফুল
দৈনন্দিন জীবনে আমরা সবাই কমবেশি সময় চা পান করে থাকি। চা যেমনই হোক তাতে মিষ্টি স্বাদ না হলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় তাই সকলে চা খেয়ে থাকে। চায়ে স্বাধ আনতে আমরা সময় চিনি বেশি ব্যবহার করে থাকি। এতে বিপত্তির সৃষ্টি করে। চিনি গ্রহণ করায় দিন দিন ডায়াবেটিস নামক রোগে আক্রান্তের হার বাড়ছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা সবসময় চায়ের ভিতরে চিনি ব্যাবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। একাধিক গবেষণা করার কারনে ফলাফল থেকে জানা যায় যে চায়ে সুস্বধু স্বাদ পেতে চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যায়। চায়ের সঙ্গে যদি মধু সেবন করা যায় শরীরের কোষগুলো সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারে।

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায়

সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য বা চেনার উপায় হলো এই মধু বোতলে রাখা হলে সরিষা ফুলের মধুর পুরোটাই জমে যেতে পারে কিংবা বেশীর ভাগ অংশ আংশিক ভাবে জমে যায়। সরিষা ফুলের মধু জমার কারনে অনেকটা ঘি-এর রূপ ধারণ করতে পার। জমে যাওয়া মধু মোলায়েম আকৃতির হয়ে থাকে। এবং ছোট ছোট দানাদার হয়ে থাকে। আমাদের এই দেশে মধু নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে। যা বহির্বিশ্বে এই মধুর বেশ চাহিদা আছে ও সেখানে হানি বলে সুপরিচিত রয়েছে। 
সব মধু এক হয়না কোনটার রং লাল,কালো আবার কোনটার কালার সাদা হয়ে থাকে। কোন কোন মধু জমে যায় আবার কোন কোন মধু জমে না। মৌমাছি একই কিন্তু ফুলের মধ্যে ভিন্নতার কারণে মধুর কালার ও স্বাধ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে সরিষা ফুলের মধুর গুন হলো এই মধূ খুবই মিষ্টি হয়ে থাকে। রং হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। সরিষা মধু সাধারণত ৭০% বেশি শর্করা আছে। তবে কার্বোহাইড্রেট ২০% এর কম থাকে। স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয় তার চেয়ে মধু অনেক বেশি পরিমানে থাকে।

সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য

সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে হলো এই মধু খুবই মিষ্টি। এটির দেখতে কিছুটা হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। এই মধুর সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এই সরিষা ফুলের মধু শীতকালে অল্প সময় বা খুবই কম সময়ে জমে যায়। তবে গরমের সময় জমতে একটু দেরি হয়ে থাকে। কোন সময় ২ থেকে ৩ সপ্তাহ সময় লাগবে। আবার কোন কোন সময় এটি ১ মাস পর‌যন্ত ও সময় লাগতে পরে। 

সরিষা ফুলের মধু বোতলে রাখা হলে সরিষা ফুলের মধুর পুরোটাই জমে যেতে পারে। তবে পুরোটাই জমে না আংশিক জমে যায়। অনেকটা ঘি-এর মতো রূপ ধারণ করে থাকে। মধু মোলায়েম বা নরম, যা ছোট ছোট দানাদার হয়ে থাক।

সরিষা ফুলের মধুর উপকারিতা

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় অনেক রয়েছে। এবং সরিষা ফুলের মধু খেলে কিছু উপকারিতা রয়েছে তা হলোঃ-
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে থাকে।
  • দাঁত পরিষ্কার ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগ বা রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনের অনেক সহায়তা করে।
  • দেহের নানা ঘাত-প্রতিঘাত হতে রক্ষা করে থাকে।
  • ক্যান্সার ও প্রতিরোধ করে।
  • যৈাবনতা বৃদ্ধি করে।
  • রক্তের হিমোগ্লোবিন পরিমাণ বাড়ায়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে।
  • শিশুদের মুখের পচনশীলের জন্য খুবই উপকারী।
  • পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
  • রুচি ও হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • ফুসফুস শক্তিশালী করে।
  • জিহ্বার ভিতরে থাকা জড়তা দূর করে।
  • মাথা বিভিন্ন ব্যথা দূর করে।
  • শিশুদের ওজন ও দৈহিক গঠন বৃদ্ধি করে।
  • ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, জ্বর দূর করে।
  • শারীরিক দুর্বলতা দূর করে।
  • তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।

সরিষা ফুলের মধুর স্বাদ

অনেকে সরিষা ফুলের মধু জমাটাকে ভুল বোঝেন বা ভুল মনে করেন। অনেকে এটিকে ভেজাল মনে করে থাকেন। তবে বাস্তবতা হলো মধু জমে যাওয়াটা একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা সকল মধুেই হয়ে থাকে। অর্ধ-কঠিন অবস্থায় এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন অথবা কঠিন মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু দ্রুত জমে যায়। তবে চাকের ভেতর মোমের কোষ থাকলে বেশি দ্রুত জমতে পারে না। তাই এই মধুর রং বদলে যায়। এটি তরল পদার্থ থেকে দানাদারে রুপান্তরিত হয়ে যায় কিন্তু মধুর গুণগত মান কমে না। 
এই কারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়ে যায়। তবে পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়ে যায়। অতএব সবচাইতে ভাল মধুর ফুল হলো সরিষা ফুল। সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছিরা মৈাচাক স্থাপন করে ভ্রাম্যমাণ মধু সংগ্রহ হরে। বর্তমানে সরিষা ফুলের মধু সবচাইতে বেশি জনপ্রিয়। সারাদেশে অভিজ্ঞ বা প্রসিদ্ধ মৈামাছি বা মৌচাষীদের কাছ থেকে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করে। এ মধুর স্বাদ সকলের খুব জনপ্রিয় একটি খাবার।

সরিষা ফুলের মধুর বাজার দর

মধুর অনেক সময় অনলাইনে বাজারজাত করে। তবে কোম্পানি ভেদে কেজি প্রতি দাম ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত দাম হয়ে থাকে।
  • সরিষা ফুলের মধু কেজি প্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
  • বড়ই ফুলের মধু কেজি প্রতি ৭৫০ টাকা।
  • ধনিয়া ফুলের মধু প্রতি কেজি ৯০০ টাকা।
  • সুন্দরবনের মধু কেজি প্রতি ১০০০ থেকে ১২০০টাকা।
  • লিচু ফুলের মধু প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১০০০টাকা।
  • সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১৪০০টাকা।
  • কালোজিরা ফুলের মধু প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৩০০টাকা।
  • মিশ্র ফুলের মধুর এক কেজি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা।

লেখকের মন্তব্য

চিনি শর্করায় ভরপুর তাই মধু খাওয়ার ভারসাম্য হওয়া উচিত। আমেরিকান গবেষক গণদের অনুসারে, নারীরা দিনে সর্বচ্চো ১০০ ক্যালোরির চিনি গ্রহণ করতে পারবে। পুরুষগণ দিনে সর্বোচ্চ ১৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত চিনি গ্রহন করতে পারবেন। 

প্রিয় পাঠক, উক্ত পোস্ট দ্বারা যদি আপনি উপকৃত হতে পারেন তাহলে কমন্টেরে মাধ্যমে আপনি আপনার মতামত জানান। এবং উক্ত পোস্ট শেয়ার করে আপনি আপনার বন্ধুদের দেখার সুযোগ করে দেবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শামিম বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url