টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি - ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাব আপনি কিভাবে ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা করবেন। এবং আপনি কিভাবে টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতিতে ফল চাষ করবেন । এবং কি কি কাজ করলে ড্রাগন ফল বেমি ধরবে।
টবে-ড্রাগন-ফল-চাষ-পদ্ধতি-ড্রাগন-ফল-গাছের-পরিচর্যা
কি কি কাজ করলে আপনার ফসল ভালো থাকবে। যাতে আপনি গাছ থেকে অধিক পরিমানের ফল চাষ করতে পারবেন।

ভুমিকা

ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল যা ইদানিং আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয় লাভ করেছে। বাংলাদেশে প্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড তারপরে ফ্লোরিডােএবং ভিয়েতনাম থেকে ড্রাগন ফলের বিভিন্ন জাত আনা হয়েছে। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস প্রকৃতির গাছ। এই গাছের কোন পাতা থাকেনা। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারনত ১ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কতৃক ড্রগন ফলের নতুন জাত হলো বারি ড্রাগন ফল-১ যা দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়াতে বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি ফল নামে পরিচিত। এ ফল আকার অনেকটা বড় হলেও পাকলে খোসার রং লাল বরনের হয়ে যায় ,শাঁস কিছুটা গাঢ় গোলাপী রঙের হয়, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির হযে থাকে। ফলের বীজগুলো ছোটেএবং কালো ও নরম হয়। একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ

ড্রাগন ফল সাধারণত তিন প্রজাতির হয়ে থাকে-
  1. লাল ড্রাগন ফল এবং পিটাইয়া। এর খোসার রঙ লাল ও শাঁস সাদা হয়। এই প্রজাতির ফল সব সময় বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
  2. কোস্টারিকা ড্রাগন ফল। খোসা ও শাঁস উভয়ের রঙই লাল।
  3. হলুদ রঙের ড্রাগন ফল। এই জাতের ড্রাগন ফলের খোসা হলুদ রঙের ও শাঁসের রঙ সাদা।

ড্রাগন ফল গাছের চারা তৈরি

ড্রাগন ফলের চারা তৈরি করার জন্য ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা ও ড্রাগন ফল গাছের শক্ত মোটা এবং মাজার ডাল নিয়ে চারা তৈরি করতে হবে। আপনি দুই ভাবে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি করতে পারেন। তার মধ্যে একটি হলো ডালটি আপনি কাটবেন সে ডালটি সরাসরি মাটিতে লাগাতে হবে। এবং আরেকটি ভাবে করতে পারেন সেটি হল একটি ছোট পলিথিনের প্যাকেটের মধ্যে বসানোর পরে সেখান থেকে ছোট ডাল বেরোনোর পরে আপনি চারাকে মাটিতে লাগাতে পারেন।

এই দুটো পদ্ধতির মধ্যে কোনটি ভালো হবে আপনার জন্য তাহলে বলতে পারি আপনি দ্বিতীয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। প্রথম পদ্ধতি যেমন ভালো কিন্তু যেহেতু মাটিতে অনেক জৈব সার এবং উপাদান থাকে সেজন্য আপনার সরাসরি ডাল লাগালে সেখানে পচন সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য আপনাকে আগে একটি ছোট টবে বা পলিথিনে সঠিক মাত্রায় জৈব উপাদান দিয়ে চারাটিকে তৈরি করে নিতে হবে।

ড্রাগন ফলের চারা কাটিং

  • প্রথমে আপনাকে যেগুলো উপাদান নিতে হবে ট্রাইকোডার্মা, সাফপাউডার (এটি মূলত ফাঙ্গিসাইট), কাটিংয়েট
  • এবার আপনি ড্রাগন ফলের ডাল দুপাশে কেটে নিন। অবশ্যই কোনটা উপরে এবং কোনটা নিচের দিকে এটা চিহ্নিত করে রাখবেন
  • এবার ডাল দুটো দু'পাশে ট্রাইকোডার্মা লাগিয়ে নিন
  • ড্রাগন ফলের ডালটি নিচের অংশ ছিলে মধ্যে কার হাড় অংশ বের করে নিন। ১ থেকে ২ ইঞ্চি বের করে নিলেই হবে।
  • কাটিংয়েট এবং সাফপাউডার একসঙ্গে মিশিয়ে ডালটির গোরাতে একটি তুলোর মাধ্যমে বা হাত দিয়ে লাগিয়ে নিন।

ড্রাগন ফলের মাটি তৈরি

ড্রাগন ফল গাছের চারা তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে অবশ্যই ভালোভাবে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। বিশেষজ্ঞের মত অনুযায়ী মাটি তৈরির জন্য যে উপাদান গুলো লাগবে সেগুলো-
  • কেঁচো সার, গোবর সার, কোকোপিট, নারকেলের ছোবরা। এবং এর সঙ্গে লাগবে গার্ডেন-ছয়েলের।
  • প্রথমে গার্ডেন-ছয়েলের মধ্যে অল্প কিছু কেঁচো সার দিয়ে মিশ্রণ করে নিন।
  • এবার গার্ডেন-ছয়েলের এবং কেঁচো সার মিশ্রণের মধ্যে সাফপাউডার অল্প পরিমাণে দিয়ে দিন।
  • সব এবার আপনি অবশ্যই মাটিগুলো ভালোভাবে মিশ্রণ করে নেবেন।

ড্রাগন ফলের চারা তৈরি

  • এবার চারার রোপনের ক্ষেত্রে অবশ্যই যে জিনিসগুলো লাগবে সেগুলো হল-ছোট টব, মিনি পলিথিন ইত্যাদি। অবশ্যই টব বা পলিথিন নিচের দিকে ছিদ্র থাকতে হবে কারণ প্রতিনিয়ত পানি দেয়ার ফলে পানি বের না হতে পেরে আপনার ড্রাগন ফলের গাছটি নষ্ট হয়ে যাবে।
  • প্রথমে টব বা মিনি পলিথিন এর মধ্য নারিকেলের ছোবা দিন
  • টবের মধ্যে মাটিগুলো অর্ধেক পরিমাণে ভরে নিন
  • মাটিগুলো আলতো ভাবে দেবে নিন
  • এবার ড্রাগন ফলের ডালটি আলতো ভাবে মাটির উপরে লাগিয়ে দিন
  • এবং বাকি মাটিগুলো দিয়ে ড্রাউন ফলের গোড়াগুলো ঢেকে দিন
  • এবার লাগানো ছাড়াতে পানি দিতে হবে। শুধু পানি না দিয়ে যদি পারেন তাহলে পানির সাথে ট্রাইকোডার্মা মিশিয়ে গাছের উপর থেকে ঢেলে দিন
  • যদি পারেন প্রতি সপ্তাহে তিন দিন ফাঙ্গিসাইট স্প্রে করতে পারেন
  • এভাবে আপনি ড্রাগন ফলের সঠিকভাবে চারা তৈরি করতে পারবেন। এটি আমার মত না এটি বিশেষজ্ঞের মতেই বলা হয়েছে। ধাপ ধাপে যদি আপনি আস্তে ধীরে এই নিয়মে যারা চারা তৈরি করেন তাহলে অবশ্যই ভালো ফল পাবেন।

টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি

আপনার বাড়িতে বা বাসা বাড়িতে অনায়াসে ড্রাগন ফল চাষ করতে পারবেন। শুধুমাত্র একটি টবের মাধ্যমে ঘরে বসে ড্রাগন ফল চাষ করতে পারেন। ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা। টবের মাধ্যমে ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে মাটির তৈরি করে নিতে হবে। মাটিতে কি ধরনের উপাদান দিবেন এবং টবের মধ্যে চারা কিভাবে লাগাবেন বিস্তারিত দেওয়া হলো-
  • প্রথমে আপনাকে টবের অনুযায়ী মাটি নিতে হবে।
  • ৪০% বেলে দোআঁশ মাটি, ৪০% জৈব সার, ১০% কোকো পিট, এবং ১০% বালি।(যে কোন বালি ব্যবহার করতে পারেন)
  • এবার আপনি মাটিগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
  • এবার একটি টব নিন, আপনাকে অবশ্যই ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি টব নিতে হবে। ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি টপ ব্যবহার করলে আপনার আর পরিশ্রম করতে হবে না।
  • এবার আপনি টবের মধ্যে মাটিগুলো আলতো ভাবে চেপে ভরাট করুন। মাটি বেশি চাপবেন না মাটিটাকে একটু লুজ রাখতে হবে।
  • আপনি যখন নার্সারি থেকে ড্রাগন ফলের চারা নিবেন অবশ্যই মোটা দেখে ড্রাগন ফলের চারার ব্রাঞ্চ নেবেন।
  • চারাটি রোপন করার জন্য আপনাকে টবের মাঝামাঝি একটি গর্ত করে নিতে হবে।
  • এবার আপনি গর্তের মধ্যে চারাটি বসিয়ে দিন। এবং আশেপাশের মাটিগুলো দিয়ে চারার গোরা গুলোতে চেপে দিন।
  • মাটি গুলো যদি শুকনা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই চারার রোপনের পরে টবের মধ্যে পানি দিয়ে দিবেন।
  • এভাবে আপনি ড্রাগন ফলে চারা রোপন করতে পারেন। আশা করি আপনি অনেক ভাল ফলাফল পাবেন।

ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি

ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে যে বিষয়গুলো জানতে হবে- ড্রাগনের ক্ষেত্রে চারা রোপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চারা রোপন করার ক্ষেত্রে কিন্তু কোন রকম ভুল করা যাবে না। ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা এবং ড্রাগন ফলের চারা কতটা মোটা হবে, কতটা সুন্দর হবে সবকিছুর নির্ভর করবে এই রোপন পদ্ধতির উপর। রোপন পদ্ধতি যদি সঠিক হয় তাহলে আপনি অনেক লাভবান হবেন। আসুন ধাপে ধাপে সঠিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করার পদ্ধতি গুলো জেনে নিন-

পিলারের রোপন পদ্ধতি

পিলার গুলো রোপনের যে প্রসেস রয়েছে এগুলো ভুল করলে চলবে না। অনেকে অনেক উঁচু পিলার করে এবং অনেকে শর্ট করে পিলার করে। পিলার করার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড মাপ রয়েছে, স্ট্যান্ডার্ড মাপ ছাড়া কখন আপনি সফল হতে পারবেন না। বিশেষজ্ঞের মতে পিলারের মাপ হল-
  • ৭ ফিট পিলার হলে এবং এটেল মাটি যদি হয় তাহলে ৭ ফিট পিলার ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হল। কারণ মাটির নিচে ৩ ফিট দেওয়া হবে এবং মাটির উপরে ৪ ফিট থাকবে।
  • আর যদি মাটি বেলে দোআঁশ হয় কিংবা দোআঁশ হয় সেক্ষেত্রে আপনি পিলারটি ৬ ফিট করলেই হবে।
  • পিলার টি গর্তের মধ্যে দেওয়ার পরে নরমাল মাটি দিয়ে পিলার টি ভরাট করবেন।
  • জমিতে স্কয়ার ৮ ফিটের ভেতরেই পিলারগুলো থাকতে হবে। অর্থাৎ খুঁটি যদি আপনার ৫ ইঞ্চি হয় ৭ ফিটের ভিতরে হলে ১০ ইঞ্চি কভার করলো অর্থাৎ মাঝখানে ৭ ফিট ২ ইঞ্চি থাকলো। আর এটি স্ট্যান্ডার মাপ এভাবে স্কয়ার করতে হবে।

মাটি মিশ্রণ জৈব সার পদ্ধতি

  • আমরা বেশিরভাগ সময় যে ভুলটা করে থাকি পিলারের মাটি সড়িয়ে জৈব সার হিউজ পরিমাণে দিই। এই ভুলটি কখনো আপনি করবেন না কারণ ড্রাগনের শিকড়গুলো উপরে থাকে। উপরে খাওয়াতে হয় উপর থেকে কিন্তু ফল আহরণ করতে হয়। 
  • অনেকে মাটির গভীরে জৈব সার দিয়ে থাকে। এই সার কোন কাজে আসবে না কারণ এই সিস্টেমটাই ভুল, এই প্রথা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
  • পিলারটি ভরাট করার পরে তার ওপরে জৈব সার পিলারের চারিদিকে ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • জৈব সার ৪ থেকে ৫ কেজি দিতে হবে। এবং একটু ডিপি আকারে করতে হবে। জৈব সার মূলত সমতল মাটির উপরেই জৈব সারটা পড়বে। 
  • জৈব সার দেওয়ার পরে দানাদার কীটনাশক ২০ থেকে ৩০ গ্রাম কারবো ফুরান দানা দিতে হবে। মাটিতে অনেক নেমাটোড থাকে, বিভিন্ন রকম পোকা থাকে। কারবো ফুরান দানা দেওয়ার ফলে পোকামাকড় মারা যায় এবং মাটিকে শুদ্ধ রাখবে।
  • এর সাথে আপনি প্রোবায়োটিক বায়োস্ট্যাটার মাটির উপরে ছিটিয়ে দেন। প্রোবায়োটিক বায়োস্ট্যাটার এটি মূলত উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলোকে মেরে ফেলতে পারে। প্রোবায়োটিক বায়োস্ট্যাটার পাঁচ থেকে সাত গ্রাম ব্যবহার করবেন।
  • জৈব সারের ওপরে নরমাল মাটি দিয়ে একটি উঁচু ঢিপি তৈরি করতে হবে।

চারা রোপন পদ্ধতি

চারা রোপন করার আগে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের চারা নিতে হবে। কারণ সুন্দর চারা না হলে সুন্দর গাছ পাওয়া খুবই কঠিন। তাহলে বিশেষজ্ঞের মতে কিভাবে চারা রোপন করবেন বিস্তার জানি-
  • প্রথমে আপনাকে রুট পর্নিং করতে হবে। রুট পর্নিং বলতে ড্রাগন ফলের চারা পুরাতন শিকড় গুলো কেটে দেয়ার পদ্ধতি হলো রুট পর্নিং। রুট পর্নিং না করলে ড্রাগন গাছের নতুন শিকড় আসতে চায় না।
  • সেজন্য আপনি অবশ্যই ড্রাগন ফলের চারা পুরাতন শিকড়গুলো কেটে দিবেন
  • রুট পর্নিং এরপর ড্রাগনের চারা রোপনের সময় যে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে- ড্রাগনের ছাড়া তিনটি সেফ থাকে। ড্রাগনের চারা রোপনের সময় আপনাকে তিনটি সেফ এর মধ্যে একটি সেফ পিলারের সাথে লাগিয়ে রাখতে হবে। মানে যে অংশ সমবাপের থাকবে সে অংশটি পিলারের সাথে লাগিয়ে রাখতে হবে।
  • পিলার থেকে ৩ - ৪ ইঞ্চি ড্রাগনের গোড়া দূরে লাগাতে হবে। পিলারের একদম গা ঘেঁষে দেওয়া যাবে না কারণ ড্রাগন গাছের যে শিকড় গুলো আছে সেগুলো একপাশে বাড়তে পারবে না।
  • এবার আপনি কে ড্রাগনের চারার গোড়া শুধুমাত্র এক ইঞ্চি মাটিতে লাগাইতে হবে। শিকড় ঢেকে দিতে যতটুকু মাটি প্রয়োজন ততটুকুই মাটিতে পুততে হবে। তাহলে খুব দ্রুত শিখুন বাড়বে।
  • সর্বশেষে লাগানো চারাতে পানি দিয়ে দিন।

ড্রাগন ফল গাছে সার প্রয়োগ

জৈব সার প্রয়োগঃ
  • ড্রাউন ফলের গাছের সার প্রয়োগের আগে আপনাকে প্রথমে ড্রাগন ফলে গাছ অনুযায়ী ১ হাত ৪ আঙ্গুল দূর দিয়ে খুরে মাটি টাকে আলগা করে নিন। যদি আপনার ড্রাগন ফলের গাছ টবে থাকে তাহলে সার প্রয়োগ করতে হবে সরাসরি।
  • সম্পূর্ণ খুরে নেওয়ার পরে মাটিগুলোকে গুঁড়ো করে নিন
  • মাটিগুলো গুরো করার পরে গাছের চারদিকে বাদ দিন
  • এবার আপনাকে বাধের ভেতরে সার প্রয়োগ করতে হবে। যে সার নেবেন সেগুলো-পাতা পচা সার ৪০%, গোবর সার ৪০%, হারগুড়া ১০%, শিংকুচি ১০%।
  • জৈব সার এই উপাদানগুলি একত্রিত মিশিয়ে গাছের চারিদিকে দিয়ে দিবেন
  • জৈব সার একটি লেয়ার করে লেয়ারের উপরে আবার একটি মাটির স্তর দিতে হবে
  • এভাবে আপনি ড্রাগন ফলের গাছে জৈব সার প্রয়োগ করতে পারবেন।
রাসায়নিক সার প্রয়োগঃ
  • ৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ৫০ গ্রাম এম ও পি অর্থাৎ মিউরেট অফ পটাশ এবং ৫০ গ্রাম ফসফরাস। এই তিনটি সার একত্রে মিশিয়ে গাছের প্রয়োগ করতে পারেন।
  • প্রথমে শিকড়ের উপরে মাটির একটি স্তর তৈরি করেন।
  • এবার সে মাটির স্তরের উপরে সার প্রয়োগ করেন।
  • আবার একটি মাটির স্তর দিতে হবে।

ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা

ছাঁটাই এবং প্রশিক্ষণঃ ড্রাগন ফলের লতা বৃদ্ধি করতে বা একটি গুল্ম, আরও পরিচালনাযোগ্য আকৃতির প্রচারের জন্য ছাঁটাই অপরিহার্য করা উচিত। প্রথমে মৃত এবং রোগাক্রান্ত ডালপালা সরিয়ে ফেলুন এবং নিয়মিতভাবে অতিরিক্ত বৃদ্ধি হওয়া আগা কেটে দিন। দ্রাক্ষা লতাগু তাদের বৃদ্ধি পরিচালনা করতে বা বায়ু সঞ্চালন বাড়াতে ট্রেলিসের একটি সমর্থন কাঠামোতে প্রশিক্ষণের কথা বিবেচনা করতে হবে।

জল দেওয়াঃ ড্রাগন ফলের গাছগুলিতে সর্বদা ও নিয়মিত পানি দেওয়া প্রয়োজন, যা বিশেষ্য তাদের ক্রমবর্ধমান মৈাসুমে। মাটি সমান ভাবে আর্দ্র বা পরিচর‌্যা করে রাখুন, এবং জলাবদ্ধ অবস্থা এড়িয়ে চলুন। আপনার এলাকার আবহাওয়া এবং যা মাটির অবস্থান ভিত্তি করে জল দেওয়ার মদ্ধে ফ্রিকোয়েন্সি যা সামঞ্জস্যা করা জরুরি। সাধারণ ভাবে, তারা ভাল-নিকাশী মাটি পছন্দ করে থাকে।

নিষিদ্ধ করণঃ ড্রাগন ফল গাছের জন্য ভারসাম্য পূর্ণ, ধীরে যুক্ত সার দিয়ে নিয়মিত খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের সাথে একটি সুষম N-P-K (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম) অনুপাত সমূহের মদ্ধে থাকা একটি সার ব্যবহার করুন। ক্রমবর্ধ মান ঋতুতে (বসন্ত ও গ্রীষ্ম) সার প্রয়োগ করুন এবং সুপ্ত ঋতুতে (পতন এবং শীত) হ্রাস করুন বা বন্ধ করুন।

কীটপতঙ্গ এবং রোগ ব্যবস্থাপনাঃ আপনি আপনার ড্রাগন ফলের কীটপতঙ্গ এবং রোগের লক্ষণগুলির জন্য আপনার ড্রাগন ফল গাছের উপর সব সময় নজর রাখুন। সাধারণ কীট-পতঙ্গের মধ্যে রয়েছে এফিড, মেলিবাগ বা পিঁপড়া। কীটনাশক সাবান অথবা নিম গাছের তেল দিয়ে তাদের পরিচালন বা পরিচর‌যা করুন। শিকড় পচা রোগের জন্য সতর্ক থাকুন, যা মাটির নিষ্কাশন নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়।

সূর্যালোক এবং তাপমাত্রাঃ ড্রাগন ফলের গাছ পূর্ণ রোদে বেড়ে ওঠে। তাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ ঘন্টা সরাসরি সূর্যের আলো প্রয়োজন। তারা ঠান্ডা তাপমাত্রার জন্য সংবেদনশীল এবং তুষারপাত দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শীতকালে তাদের ঢেকে না রেখে রোদের ভিতরে সরিয়ে দিয়ে চরম ঠান্ডা থেকে তাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করুন। এতে আপনার ফল ভালো হবে।

সমর্থন কাঠামো রক্ষণাবেক্ষণঃ আপনি যদি আপনার ড্রাগন ফলের লতাগুলির জন্য ট্রেলিস অথবা সমর্থন কাঠামো প্রদান করে। তবে এটি নিয়মিত পরীক্ষা করুন বা রক্ষণাবেক্ষণ করুন। নিশ্চিত করুন যে এটি শক্ত এবং ক্রমবর্ধমান লতা অথবা ফলের ওজনকে সমর্থন করতে পারে।

ফসল কাটাঃ ড্রাগন ফল কাটার জন্য প্রস্তুত হয় যখন এটি রঙ পরিবর্তন করে বা ফলটি স্পর্শে কিছুটা নরম হয়। ফলের ক্ষতি এড়াতে আলতো করে ফসল কাটা উটিত।

মালচিংঃ আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য, মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অথবা আগাছা দমন করতে গাছের গোড়ার চারপাশে জৈব স্বার দিয়ে চারিদিকে স্তর প্রয়োগ করুন।

বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করুনঃ পুষ্টির ঘাটতির ফলে, চাপ বা ক্ষতির কোনো লক্ষণের জন্য নিয়মিত ভাবে আপনার ড্রাগন ফলের গাছ পরিদর্শন করুন। দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করতে অবিলম্বে সমস্যাগুলির সমাধান করুন। যা আপনার জন্য অত্বান্ত প্রয়োজন।

বংশবিস্তারঃ আপনি আপনার ড্রাগন ফল বাগানটি প্রসারিত করতে চান, তাহলে কাটা থেকে নতুন গাছের প্রচার বিবেচনা করুন যাতে খুব সহজে আপনার গাছ বৃদ্ধি পায়। কান্ডের আগাছা নিয়ে অথবা রোপণ করার আগে তাদের শিকড় অনুমতি করা যায়।

লেখক এর মন্তব্য

প্রয়ি পাঠক বন্ধুগন, আশা করি আপনি আমাদের এই পোস্ট থেকে ড্রগন ফল সম্পর্কে সকল তথ্য জেনেছেন। 

আমাদের এই পোস্টটি পড়ার পর আপনার মতামতটি কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন। এবং উক্ত পোস্টটি শেয়ার দিয়ে আপনার বন্ধুদের জানার সুয়োগ করে দিবেন। এবং পরবর্তিতে আপনি কি রকম পোস্ট পড়তে আগ্রহি তা কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিবেন। আমি সব সময় চেষ্টা করব আপনাদের মনের আশা পুরন করতে। এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শামিম বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url